Search

Showing posts with label আল মাহমুদ. Show all posts
Showing posts with label আল মাহমুদ. Show all posts

একুশের কবিতা -আল মাহমুদ


ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ
দুপুর বেলার অক্ত
বৃষ্টি নামে, বৃষ্টি কোথায় ?
বরকতের রক্ত।
হাজার যুগের সূর্যতাপে
জ্বলবে এমন লাল যে,
সেই লোহিতেই লাল হয়েছে
কৃষ্ণচূড়ার ডাল যে !প্রভাতফেরীর মিছিল যাবে
ছড়াও ফুলের বন্যা
বিষাদগীতি গাইছে পথে
তিতুমীরের কন্যা।
চিনতে না কি সোনার ছেলে
ক্ষুদিরামকে চিনতে ?
রুদ্ধশ্বাসে প্রাণ দিলো যে
মুক্ত বাতাস কিনতে ?
পাহাড়তলীর মরণ চূড়ায়
ঝাঁপ দিল যে অগ্নি,
ফেব্রুয়ারির শোকের বসন
পরলো তারই ভগ্নী।
প্রভাতফেরী, প্রভাতফেরী
আমায় নেবে সঙ্গে,
বাংলা আমার বচন, আমি
জন্মেছি এই বঙ্গে।

গৃহলতা -আল মাহমুদ



ঈদের দিনে জিদ ধরি না আর
কানে আমার বাজে না সেই
মায়ের অলঙ্কার।
কেউ বলে না খাও
পাতের ভেতর ঠাণ্ডা হলো
কোর্মা ও পোলাও।
কোথায় যেন মন চলে যায়
মেঘের ওপর ভেসে
দুয়ার ধরে দাঁড়িয়ে আছে
মাতৃছায়া এসে।
ছায়া কেবল ছায়া
ছায়ার ভেতর বসত করে
চিরকালের মায়া।
মায়ার মোহে মুগ্ধ আমি
মায়ায় ডুবে থাকি
মায়ার ঘোরে বন্দী আমি
নিজকে বেঁধে রাখি॥

মাতৃছায়া -আল মাহমুদ

হারিয়ে কানের সোনা এ-বিপাকে কাঁদো কি কাতরা?
বাইরে দারুন ঝড়ে নুরে পড়ে আনাজের ডাল,
তস্করের হাত থেকে জেয়র কি পাওয়া যায় ত্বরা –
সে কানেট পরে আছে হয়তো বা চোরের ছিনাল !
পোকায় ধরেছে আজ এ দেশের ললিত বিবেকে
মগজ বিকিয়ে দিয়ে পরিতৃপ্ত পন্ডিত সমাজ।
ভদ্রতার আবরণে কতদিন রাখাযায় ঢেকে
যখন আত্মায় কাঁদে কোনো দ্রোহী কবিতার কাজ?
ভেঙ্গোনা কাঁচের চুড়ি, ভরে দেবো কানের ছেঁদুর
এখনো আমার ঘরে পাওয়া যাবে চন্দনের শলা,
ধ্রুপদের আলাপনে অকস্মাৎ ধরেছি খেউড়
ক্ষমা করো হে অবলা, ক্ষিপ্ত এই কোকিলের গলা।
তোমার দুধের বাটি খেয়ে যাবে সোনার মেকুর
না দেখার ভান করে কতকাল দেখবে, চঞ্চলা?

মেঘনা নদীর শান্ত মেয়ে তিতাসে

আল মাহমুদ

ভর দুপুরে

মেঘনা নদীর শান্ত মেয়ে তিতাসে
মেঘের মত পাল উড়িয়ে কী ভাসে!
মাছের মত দেখতে এ কোন পাটুনি
ভর দুপুরে খাটছে সখের খাটুনি।

ওমা এ-যে কাজল বিলের বোয়ালে
পালের দড়ি আটকে আছে চোয়ালে
আসছে ধেয়ে লম্বা দাড়ি নাড়িয়ে,
ঢেউয়ের বাড়ি নাওয়ের সারি ছাড়িয়ে।

কোথায় যাবে কোন উজানে ও-মাঝি
আমার কোলে খোকন নামের যে-পাজি
হাসছে, তারে নাও না তোমার নায়েতে
গাঙ-শুশুকের স্বপ্নভরা গাঁয়েতে;
সেথায় নাকি শালুক পাতার চাদরে
জলপিপিরা ঘুমায় মহা আদরে,
শাপলা ফুলের শীতল সবুজ পালিশে
থাকবে খোকন ঘুমিয়ে ফুলের বালিশে।