নন্দলাল
নন্দলাল
তো একদা একটা করিল ভীষণ পণ -
স্বদেশের
তরে, যা করেই হোক,
রাখিবেই সে জীবন।
সকলে
বলিল, 'আ-হা-হা
কর কি, কর কি, নন্দলাল?'
নন্দ
বলিল, 'বসিয়া বসিয়া রহিব কি চিরকাল?
আমি
না করিলে কে করিবে আর
উদ্ধার এই দেশ?'
তখন
সকলে বলিল- 'বাহবা বাহবা বাহবা বেশ।'
নন্দর
ভাই কলেরায় মরে, দেখিবে তারে কেবা!
সকলে
বলিল, 'যাও না নন্দ, করো
না ভায়ের সেবা'
নন্দ
বলিল, ভায়ের জন্য জীবনটা যদি দিই-
না
হয় দিলাম, -কিন্তু অভাগা দেশের হইবে কি?
বাঁচাটা
আমার অতি দরকার, ভেবে দেখি চারিদিক'
তখন
সকলে বলিল- 'হাঁ হাঁ হাঁ, তা বটে, তা
বটে, ঠিক।'
নন্দ
একদা হঠাৎ একটা কাগজ করিল বাহির,
গালি
দিয়া সবে গদ্যে, পদ্যে বিদ্যা করিল জাহির;
পড়িল
ধন্য দেশের জন্য নন্দ খাটিয়া খুন;
লেখে
যত তার দ্বিগুণ ঘুমায়, খায় তার দশ গুণ;
খাইতে
ধরিল লুচি ও ছোকা ও
সন্দেশ থাল থাল,
তখন
সকলে বলিল- 'বাহবা বাহবা, বাহবা নন্দলাল।'
নন্দ
একদা কাগজেতে এক সাহেবকে দেয়
গালি;
সাহেব
আসিয়া গলাটি তাহার টিপিয়া ধরিল খালি;
নন্দ
বলিল, 'আ-হা-হা!
কর কি, কর কি! ছাড়
না ছাই,
কি
হবে দেশের, গলাটিপুনিতে আমি যদি মারা যাই?
বলো
কি' বিঘৎ নাকে দিব খত যা বলো
করিব তাহা।'
তখন
সকলে বলিল – 'বাহবা বাহবা বাহবা বাহা!'
নন্দ
বাড়ির হ'ত না
বাহির, কোথা কি ঘটে কি
জানি;
চড়িত
না গাড়ি, কি জানি কখন
উল্টায় গাড়িখানি,
নৌকা
ফি-সন ডুবিছে ভীষণ,
রেলে 'কলিসন' হয়;
হাঁটতে
সর্প, কুকুর আর গাড়ি-চাপা
পড়া ভয়,
তাই
শুয়ে শুয়ে, কষ্টে বাঁচিয়ে রহিল নন্দলাল
সকলে
বলিল- 'ভ্যালা রে নন্দ, বেঁচে
থাক্ চিরকাল।'
No comments:
Post a Comment